Header Ads

প্যানিক ডিজওর্ডারের কারণ এবং হোমিও চিকিৎসা

 

অপরিচিত মানুষের সামনে লিখতে গিয়ে হাত ও বুক কাঁপার সমস্যাটি মূলত ভয়, আত্মবিশ্বাসের অভাব, স্নায়বিক দুর্বলতা এবং মানসিক চাপের কারণে হতে পারে। হোমিওপ্যাথিতে এটি ট্রেমর (Tremor) বা পারকিনসনসিজমের (Parkinsonism) মতো শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি মানসিক অস্থিরতা ও ফোবিয়া হিসেবেও বিবেচিত হয়।

সম্ভাব্য কারণসমূহ:

1. মানসিক দুর্বলতা ও ভয়: অপরিচিত বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সামনে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলা।


2. পারিবারিক বা সামাজিক চাপে বেড়ে ওঠা: ছোটবেলা থেকে বেশি শাসনের মধ্যে থাকলে আত্মবিশ্বাস কমে যেতে পারে।


3. স্নায়বিক দুর্বলতা: শরীরে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, অথবা ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতি থাকলে হাত কাঁপতে পারে।


4. চিন্তা ও উদ্বেগজনিত ট্রেমর: অতিরিক্ত টেনশন বা সামাজিক উদ্বেগ (Social Anxiety)।


5. ক্যাফেইন বা নিকোটিনের প্রভাব: অতিরিক্ত চা, কফি বা ধূমপান করলে স্নায়ু উত্তেজিত হয়ে হাত কাঁপতে পারে।




---

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা:

এই সমস্যার জন্য বেশ কিছু কার্যকর হোমিওপ্যাথিক ওষুধ রয়েছে, তবে সঠিক চিকিৎসার জন্য ব্যক্তির প্রকৃতি, লক্ষণ ও মানসিক অবস্থা বিবেচনা করা জরুরি।

১. Gelsemium Sempervirens 30/200

লক্ষণ: পরীক্ষা বা অপরিচিত ব্যক্তির সামনে গেলে ভয় ও আত্মবিশ্বাসের অভাব, হাত-পা কাঁপা, দুর্বল লাগা।

ডোজ: দিনে ২-৩ বার ৩০ শক্তির ওষুধ, অথবা সপ্তাহে ১-২ বার ২০০ শক্তির ওষুধ।


২. Argentum Nitricum 30/200

লক্ষণ: ভয় ও উদ্বেগের কারণে হাত কাঁপা, তাড়াহুড়ো করা, সামাজিক ভীতিজনিত কাঁপুনি।

ডোজ: দিনে ২-৩ বার ৩০ শক্তি বা প্রয়োজন অনুযায়ী ২০০ শক্তি।


৩. Kali Phosphoricum 6X

লক্ষণ: অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে স্নায়বিক দুর্বলতা, আতঙ্কে হাত কাঁপা, দুর্বলতা ও অবসাদ।

ডোজ: দিনে ৩-৪ বার ৪-৫টি বড়ি।


৪. Lycopodium Clavatum 200

লক্ষণ: অপরিচিত মানুষের সামনে ভয় পাওয়া, আত্মবিশ্বাসের অভাব, বেশি কথা বলতে না পারা।

ডোজ: সপ্তাহে ১-২ বার ২০০ শক্তি।


৫. Phosphorus 30/200

লক্ষণ: মানুষজনের সামনে কাঁপুনি, সামাজিক পরিবেশে অস্থিরতা, বুক ধড়ফড় করা।

ডোজ: দিনে ২-৩ বার ৩০ শক্তি বা সপ্তাহে ১-২ বার ২০০ শক্তি।



---

অন্যান্য করণীয়:

✔ অভ্যাস গড়ে তুলুন: প্রতিদিন আয়নার সামনে কথা বলার অনুশীলন করুন।
✔ শরীরচর্চা করুন: যোগব্যায়াম ও মেডিটেশন করলে মানসিক চাপ কমবে।
✔ খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করুন: চা, কফি, ফাস্টফুড কমিয়ে ভিটামিন বি১২ ও ম্যাগনেসিয়ামযুক্ত খাবার খান।
✔ নিয়মিত ঘুমান: পর্যাপ্ত ঘুম না হলে স্নায়ু দুর্বল হয়ে কাঁপুনি বাড়তে পারে।

উপসংহার:

হাত ও বুক কাঁপার সমস্যাটি মূলত মানসিক ও স্নায়বিক কারণে হয়। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার পাশাপাশি নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য ধৈর্য ধরতে হবে। সঠিক ওষুধ বেছে নেওয়ার জন্য একজন অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উত্তম।


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.